নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার খিরাম ইউনিয়নের মগকাটা—অত্যন্ত দুর্গম ও পাহাড়ঘেরা একটি গ্রাম। একসময় এই গ্রামে ছিল না কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিশুরা বেড়ে উঠত শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে। সেই অন্ধকারে এক টুকরো আলোর মশাল জ্বালিয়েছে হযরত আহমদ ছাফা (রহ.) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা। ২০১৬ সালের নভেম্বরে এই মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে এর নাম ছিল হযরত আহমদ ছাফা (রহ.) তালীমুল কোরআন মাদ্রাসা। পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় হযরত আহমদ ছাফা (রহ.) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী সাংবাদিক আজিমুল গনি। নানুপুরের এই সন্তান দেশ ও বিদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের সহযোগিতায় মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব হযরত আহমদ ছাফা (রহ.)-এর নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণ হিসেবে। প্রতিষ্ঠার অল্প সময় পরই নির্মিত হয় এক দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদ। এরপর স্থাপিত হয় হেফজখানা ও এতিমখানা। বর্তমানে মাদ্রাসার চারপাশে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। এখন এই মাদ্রাসায় শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে। পাশাপাশি রয়েছে হেফজ বিভাগ, যেখানে অভিজ্ঞ ও ক্বারী শিক্ষকরা হিফজুল কোরআনের পাঠদান করছেন।মসজিদ নির্মিত হওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং আশপাশের মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। ফলে ধর্মীয় পরিবেশ আরও দৃঢ় হয়েছে। মাদ্রাসাটিকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় এসেছে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন। আগে যেখানে ছিল নিরব, নির্জন পাহাড়ি গ্রাম, এখন সেখানে গড়ে উঠেছে মার্কেট, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসীর জীবনযাত্রায় এসেছে গতি ও উন্নয়ন। এই মাদ্রাসায় পরিদর্শনে এসেছেন দেশের নামকরা আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, বড় বড় দরবারের শাহজাদা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাঁরা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং দোয়া করেছেন। দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের দোয়া ও সহযোগিতায় মাদ্রাসাটি এগিয়ে যাচ্ছে আলোর পথে। শিক্ষা, নৈতিকতা ও ধর্মীয় জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। এলাকাবাসীর ভাষায়— “এই মাদ্রাসা না থাকলে মগকাটা আজও অন্ধকারে থাকত। এটি আমাদের গ্রামের উন্নয়নের সূচনা করেছে।” নিঃসন্দেহে বলা যায়, হযরত আহমদ ছাফা (রহ.) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা আজ মগকাটার অন্ধকারে এক উজ্জ্বল আলোর মশাল হয়ে জ্বলছে।