
ডেস্ক রিপোর্ট
১৯৭৭ সালে ১১আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী, চট্রলবীর চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলীয় গেরিলাবাহিনীর অধিনায়ক, চট্টগ্রাম নেভাল অপারেশন জ্যাকপটের প্রধান বেইজ কমান্ডার, চট্টগ্রাম আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি,চট্টগ্রাম শহর ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি, চট্টগ্রাম মুজিব বাহিনীর প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মৌলভী ছৈয়দ আহমেদের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ।
মৌলভী সৈয়দ শুধু একজন ব্যক্তির নাম নয়। একটি আদর্শের নাম, একটি ত্যাগের অমর কীর্তির নাম, একজন কালজয়ী রাজনৈতিক মহাপুরুষের নাম। যিনি নিজের জীবন দিয়ে লিখে গেছেন আওয়ামী রাজনীতিতে বিরল ও জীবন দানের এক অস্পর্শনীয় ইতিহাস। জাতির জনকের হত্যাকান্ডের পর সবাই যখন অসহায় ও আপোষ বা আত্মগোপনে কিংবা কারাগারে। বীর মৌলভী সৈয়দ তখন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রথম শাহাদত বরণকারী মৌলভী সৈয়দের কথা বলছি। যিনি চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন,চট্টগ্রামে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, রাজনীতিতে অনলবর্ষী বক্তা ছিলেন,মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা অপারেশন জেকপট কমান্ডার ছিলেন। মাদ্রাসায় লেখা পড়া করলেও প্রগতিশীল রাজনীতি, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আত্ত্বত্যাগকারী ছিলেন। জাতির জনকের ঘনিষ্ট এই সহচর ১৫আগষ্টের মহাবিয়োগাক্রান্ত ঘটনার পর স্বশস্ত্র প্রতিবাদের পথ বেচে নেন।আজকে যেখানে নেতা পরিবর্তন, আখের গোচানো, বেঈমানিটা পার্ট অব পলিটিক্স, সেইখানে মৌলভী সৈয়দ সূর্যের সাথে লটকিয়ে রাখার মতো দীপ্তিমান আদর্শ,যা স্বার্থবাজ ও নীতিহীন রাজনীতিকে লজ্জায় ফেলে দেয়। নেতার অবর্তমানে জীবন,স্বার্থ,লোভ লালসা,মায়ার বাধনকে পায়ে ঠেলে নেতার জন্য জীবন দিয়েছেন। ঘুণে ধরা রাজনীতিতে মৌলভী সৈয়দ ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত বহন করে, নতুন সমুন্নত পথের বার্তা দেয়, সাহস ও বীরত্বের অমর কাব্য রচনা করে।যে পথে হাটাটা সবার পক্ষে সম্ভব নয়।ইতিহাসের বরপুত্র মৌলভী সৈয়দ তার জীবন দিয়ে তাই প্রমাণ করেছেন। ঘাতক,বেঈমান আর স্বার্থ লোভীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন রাজনীতিতে সবাই বেঈমান হয় না,সবাই খন্দকার মোশতাক হয় না,সবাই মৌলভী সৈয়দও হয় না।আওয়ামীলীগটা মৌলভী সৈয়দদেরও সংগঠন, যারা নেতা ও দলের জন্য নিজের জীবনও দান করেন।জন্মভূমি আর জনকের শপথে বলীয়ান হয়ে রাজনীতিতে নেমেছিলেন,
আত্মবিসর্জন দিয়ে ইতিহাসের অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরলেন নিজের জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করেন। সামরিক শাসকের নির্যাতনের বর্বর স্টীম রোলার, রক্ত চক্ষু,সরকারের বলপ্রয়োগকারী যন্ত্র,লোভনীয় প্রস্তাব প্রলোভন যাকে সিদ্ধান্ত থেকে টলাতে পারে নি। যার ফলশ্রুতিতে সামরিক জান্তার হাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিয়েছেন বাংলার দামাল ছেলে, বাঁশখালী মাটির দূর্লভ নক্ষত্র মৌলভী সৈয়দ। ১৯৭৭সালের ১১আগস্ট খুব নির্মমভাবে পাশবিক অত্যাচার করে হত্যা করা হয়, এই মহান নেতাকে। যার সমস্ত হৃদয় জুড়ে ছিল মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বদেশপ্রেম।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিক মৌলভী সৈয়দ শুধু একটি নাম নয় স্বশস্ত্র বিপ্লবের নাম।নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে যান তিনি বীর, তিনি আদর্শের প্রতিক।মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা কমান্ডার হিসাবে যে স্বাধীনতা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেন জাতির পিতার নির্দেশে।মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ত্যাগী,সুবক্তা,মেধাবী সংগঠক ছিলেন।বীর চট্রগ্রামের কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম হলেন বীর মৌলভী সৈয়দ।তার মত নেতা জন্ম নেওয়া আজ স্বপ্নের কথা। তিনি ইতিহাসের নায়ক,পুরুষ নয় সুপুরুষের নাম।জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসাবে মরে প্রমাণ করে যান অন্যায়ের সাথে আপোষ নয়।অপমানের চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়।মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে যাওয়া যোদ্ধা হলেন বীর মৌলভী সৈয়দ। আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শের নাম মৌলভী সৈয়দ।তার ত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসা রইল। তার মৃত্যু বার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপকমিটির সদস্য তসলিম উদ্দিন রানা বলেন – মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি সংগঠকের নাম মৌলভী সৈয়দ।তার মত আদর্শিক,সাহসী ও ত্যাগী নেতা নেই বললে চলে।মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা কমান্ডার ও চট্রগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাতা হিসাবে তার অবদান অতুলনীয়।বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুনী জিয়া সরকার তাকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক ঘটনা।তার আদর্শ নিয়ে আজ আমাদের প্রত্যেকের রাজনীতি করা জরুরী। তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন আমিন।
leave your comments